নদীর নাম হরিহর। সে দিন অনিন্দ সুন্দর নদীর স্বচ্ছ পানি কিছু সময়ের জন্য রক্ত লাল হয়ে উঠেছিল। দিনটি ছিল রমজানের তৃতীয় দিন। বলছি ১৯৭১ সালের ২৩ অক্টোবরের কথা। এ দিনে যশোরের মণিরামপুরে পাকহানাদার বাহিনীর হাতে দেশের পাঁচ মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
মুক্তিযোদ্ধারা হলেন :
১. আশিকুর রহমান তোজো : লন্ডন থেকে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে দেশে ফিরে কৃষকদের উন্নয়নে কাজ শুরু করেছিলেন। তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টির একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন। তৎকালীন অস্থায়ী সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ তোজোর দেওয়া গাড়ী ব্যবহার করতেন।
২. সিরাজুল ইসলাম শান্তি : জেলা কৃষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
৩. বজলুর রহমান বজলু : পূর্ব পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টি (এমএল)-এর একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন।
৪. আহসান উদ্দীন খান মানিক : ছাত্র ইউনিয়ন যশোর জেলা শাখার সভাপতি ছিলেন ও
৫. আসাদুজ্জামান আসাদ : তিনি এমএম কলেজের ভিপি ও ১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানে ছাত্রদের ১১ দফা আন্দোলনের সর্বদলীয় ছাত্র সংগঠনের আহ্বায়ক ছিলেন।
যশোর জেলা শহর থেকে ৩০ কিলোমিটার দক্ষিণে কেশবপুর সড়কের চিনাটোলা বাজারের পূর্বপাশে হরিহর নদীর তীরে/ব্রিজের উপর এই ৫ মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করা হয়। রাজাকারদের ভয়ে সেদিন কেউ এগিয়ে না আসলেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পরবর্তী দিন দুই অনন্য সাহসী ব্যক্তি নদীর তীরে যেখানে তাদের হত্যা করা হয়েছিল তার পাশেই একটি বড় কবর খুঁড়ে একই কবরে তাদেরকে সমাহিত করেন।
এই ৫ শহীদের কবর একত্রে শহীদ আসাদের কবর নামে অধিক পরিচিত। যশোরের শহীদ আসাদ ও ১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানে শহীদ আসাদ (আমানুল্লাহ আসাদুজ্জামান) এক ব্যক্তি নয়।
যেভাবে যাবেন : যশোর জেলা শহর থেকে ৩০ কিলোমিটার দক্ষিণে কেশবপুর সড়কের চিনাটোলা বাজারের পূর্বপাশে হরিহর নদীর তীরে। জেলা শহর থেকে যেকোনো লোকাল বাহনে করে যেতে পারবেন।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।